ঢাকা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

চাল আমদানি না করায় সাশ্রয়ী হয়েছে ডলার 

চাল আমদানি না করায় সাশ্রয়ী হয়েছে ডলার 

ডলার সংকট মোকাবিলায় চাল আমদানির বিপরীতে জোর দেওয়া হচ্ছে কৃষকের কাছ থেকে বেশি হারে ধান সংগ্রহকে। এরই মধ্যে চাল আমদানি খাত থেকে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা বরাদ্দ কমানো হয়েছে। এতে সাশ্রয় হবে কমপক্ষে ১৫ কোটি মার্কিন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বিগত মৌসুমগুলোয় উৎপাদন ভালো হওয়ায় এই আমন মৌসুমের সংগ্রহ পর্যন্ত চাল আমদানির প্রয়োজন নেই। এর পাশাপাশি ডলার সংকটের কারণেও চাল আমদানি না করে খাদ্য পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেওয়া যায়, সেদিকেই গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। ২০২১-২২ অর্থবছরে সাড়ে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করা হলেও এরপর গত ২১ এপ্রিল পর্যন্ত কোনো চাল আমদানি করা হয়নি। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) হিসাবে চলতি অর্থবছরে মোট ৪ কোটি ১২ লাখ টন চাল উৎপাদন হতে পারে। এর মধ্যে বোরো ২ কোটি ৯ লাখ টন, আউশ ৩০ লাখ টন ও আমন ১ কোটি ৭০ লাখ টন। আর দেশে চালের চাহিদা ৩ কোটি ৫০ লাখ টনের কাছাকাছি। সেই হিসেবে দেশে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টন চাল উদ্বৃত্ত আছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসেবে বিশ্ববাজারে চালের বাড়তি দামের কারণে গত এক বছরে বাংলাদেশে কোনো সেদ্ধ চাল আমদানি হয়নি। যেখানে ২০২১ ও ২০২২ সালে দেশে ৮ থেকে ১০ লাখ টন চাল আমদানি করা হয়েছিল। আর তাতে সাশ্রয়ী হয়েছে বিপুল পরিমাণ ডলার। গত বছর বাংলাদেশে চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ কোটি ৭৭ লাখ মেট্রিক টন। এর বিপরীতে চালের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ মেট্রিক টন। কৃষি বিভাগ বলছে, এভাবে ২০১৮ সাল থেকেই বাংলাদেশে চাহিদার চেয়ে বেশি পরিমাণ চাল উৎপাদন হচ্ছে। চলতি বছরেও উৎপাদনের এই ধারাহিকতা রক্ষা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার জানিয়েছেন, বিগত বছরেও চাল আমদানির প্রয়োজন হয়নি। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের আমদানির তথ্য বলছে গত বছরের জুলাই থেকে এই বছরের ৭ মার্চ পর্যন্ত কোন চাল আমদানি করা হয়নি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুসারে মাথাপিছু ১৫২ কেজি চালের প্রয়োজনীয়তা ধরে নিয়ে আমাদের বার্ষিক চালের চাহিদা নিরূপণ করা যায়। বর্তমানে দেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষ আছে। তাতে বার্ষিক খাদ্যচাহিদা দাঁড়ায় ২ কোটি ৫৮ লাখ মেট্রিক টন চাল। এর সঙ্গে বীজ ও অপচয় এবং পশুখাদ্য বাবদ ১৫ শতাংশ যোগ করে মোট চালের প্রয়োজন দাঁড়ায় ২ কোটি ৯৬ লাখ টন বা প্রায় ৩ কোটি টন। দৈনিক চালের চাহিদা আরও বেশি বিবেচনায় নিয়ে মাথাপিছু দৈনিক আধা কেজি বা বার্ষিক জনপ্রতি ১৮২ দশমিক ৫ কেজি হিসেবে চালের চাহিদা দাঁড়ায় ৩ কোটি ১০ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন। বীজ, অপচয় ও পশুখাদ্য হিসেবে আরো ১৫ শতাংশ যোগ করা হলে মোট চাহিদা দাঁড়ায় ৩ কোটি ৫৬ লাখ ৭৮ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে চালের উৎপাদন ছিল ৪ কোটি ১৩ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে মজুত আছে ১৩ লাখ ১৪ হাজার ৬০৯ মেট্রিক টন। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিস্টিটিউটের (বিআরআরআই) পলিসি গবেষণার প্রজেকশন অনুযায়ী, ২০৩০ সালে বাংলাদেশে ৪ কোটি ৬৯ লাখ টন, ২০৪১ সালে ৫ কোটি ৪১ লাখ টন এবং ২০৫০ সালে ৬ কোটি ৯ লাখ টন চালের প্রযোজন হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত